শফিক মিয়া আমাদের গ্রামেরই লোক… তিনি মাছ ধরতে ভালবাসতেন আর মাছ ধরায়ও খুব পটু ছিলেন… তিনি রাত জেগে সারা বিল জুড়ে মাছ ধরতেন। প্রত্যেক দিন অবিশ্বাস ভাবে প্রচুর মাছ পেতেন। সবাই উনার কাছ থেকে মাছ কিনত। আমরাও অনেক বার কিনেছিলাম… গল্প বেসী বড় করবোনা তাই ঘটনায় আসি… একদিন উনি মাছ ধরতে ধরতে পুরানা জঙ্গলের ধারে চলে গিয়েছিলেন তবে তিনি তা খেয়াল করেননি আর খেয়াল করলেও পাত্তা দিলেননা… কিছুক্ষণ পর তিনি ওখানে একটা ছেলেকে দেখে যে কিনা অনেক মাছ ধরছে কোনো লাইট ছাড়া। সফিক মিয়া কিছু বুঝে পেলেন না তাই তিনি ছেলেটিকে ডাক দিয়েসিলেন কিন্তু ছেলেটি ভ্রুকুটি করলো না। এতে উনার রাগ হয় আর কাছে গিয়ে ধমক লাগান, ধমক শুনে ছেলেটি শফিক মিয়ার দিকে ঠান্ডা চোখে তাকায় এবং বলে নিজের মাছ নিজে ধর আর এদিক ওদিক না তাকাতে… শফিক মিয়া বলে তাকালে কি হবে তর বাপ আসবে নাকি? তোর গ্রাম কোনটা রে ছোকরা? এতে ছেলেটি হেসে বলে, আমিতো ভাল নিজে মাছ ধরি! বাবা আসলেতো আপনার মাছ শুদ্ধ নিয়ে যাবে। একথা শুনে শফিক মিয়া রেগে বলে আজ তোর মাছ আমি ই নিয়ে যাব আর তর বাপকে আসতে বলিস কাল। এইবলে তিনি ছেলেটির মাছ নিয়ে চলে আসতে লাগলো, তখন ছেলেটি বলে আমরা সবার মাছ নি ই আর তুমি আমার মাছ নিচ্ছ, নাও। আমি কিছু করবো না তবে কালকে এখানে আসিও না… শফিক মিয়া বলে বললাম না তোর বাপরে আসতে বলিস, এবার ছেলেটি কিছু রেগে বলে বোকা বুঝিস না কেন (!) মাছ না নিলে কাল আমার বাবাই আসবে বুঝবি তখন! তারপর ছেলেটি চলে যায় পুরানা জঙ্গলের দিকে… শফিক মিয়া পরদিন সন্ধ্যায় মাছ ধরতে যাবার আগে কিছু লোককে দোকানে চা খেতে খেতে এই ব্যাপারে বলেছিলেন । আর ঝগরা লাগলে সাহ্যায করতে বলেছিলেন, লোকেরা তাকে যেতে নিষেধ করেছিল কিন্তু তিনি শুনেনি চলে গেলেন মাছ ধরতে তবে ঐখানে গেলেন না অন্যদিকে… অনেকের সাথে মাছ ধরছিল আর কিছুক্ষন পর সবাই ডেকে ডেকে কথা বলছিল তখন একজন এসে শফিক মিয়াকে বলল উনি পুরানা জঙ্গলের দিকে যাবে... শফিক মিয়া যাবে কিনা, কিছুক্ষন ভেবে রাজী হলেন আর দুইজন ঐদিকে গেলেন… আরো কিছুক্ষন পর শফিক মিয়া যাদের বলেছিল তারা উনার খজ নিয়ে দেখলো উনি নাই… উনারা কয়েকজন একসাথে পুরানা জঙ্গলের দিকে গেলেন আর লাইট দিয়ে ভাল করে দেখতে লাগলেন… হঠাত একজন কাদার মাঝে একটা কিছু দেখে সবাইকে ডাকলেন, সবাই এসে দেখে শফিক মিয়া কাদার মাঝে ডুবানো… সবাই তাকে টেনে কাদা থেকে বের করলেন, তার সারা শরীরের হাড় ভাঙ্গা আর মুখের মদ্ধ্যে বড় একটা কই মাছ ঢুকানু ছিল… দুই দিন হাসপাতালে মুমূর্ষু অবস্থায় থাকার পর তার মৃত্যু হয়…!
শনিবার, ৭ অক্টোবর, ২০১৭
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
Post Top Ad
Author Details
গল্প পড়তে বা শুনতে কে না ভালোবাসে,সেই ছোট্ট বেলায় দাদির কোলে,নানির কোলে, বা অন্য কারো কোলে ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে বা চোখ কান খাড়া করে, বৃষ্টি বা শীতের রাতে খাতা মুরি দিয়ে অথবা চাঁদনি রাতে উঠোনে বা ছাদে পাটি বিছিয়ে গল্প কিচ্ছা শুনেনি এমন কোন মানুষ পাওয়া যাবে না।

কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
HELLO! VISITOR