- কিছু মানুষের জন্মই হয়েছে বুক ভরা কষ্ট লুকিয়ে ভালো থাকার অভিনয় করে অন্যের মুখে হাসি আনা। প্রতিটা মানুষই স্বার্থপর। কেউ ভালো থাকার জন্য স্বার্থপর হয় আবার কেউ অন্যকে ভালো রাখার জন্য স্বার্থপর হয়। জীবনে চলার পথে অনেকের সাথেই কাকতালীয় সম্পর্ক হয়ে থাকে। সেই সম্পর্ক কে অন্ধবিশ্বাসে অাপন ভেবে আজ আমি অবহেলিত। নিজের জীবনের চেয়েও বেশি অন্যকে প্রাধান্য দিতে নেই।
..
..
→ মুক্তার সাথে আমার ফেসবুকে পরিচয়। নিজের অজান্তেই একদিন আমি মুক্তা কে এড করি এবং ওর ইনবক্সে নক করি। নক করতেই অপর প্রান্ত থেকে রিপ্লাই চলে আসে। এইভাবে একদিন কেটে গেল। তখন আমি অনিয়মিত ছিলাম ফেবুকে। মন চাইলে আসি নাহয় না।
..
..
মুক্তার এড হয়েছি প্রায় ৫/৬ দিন হবে। তারই মধ্যে মুক্তা আমার সাথে কন্টিনিউ চ্যাট করতে লাগলো। একদিন মুক্তা বলল আমাকে তার পরিচিত পরিচিত লাগে। তখন আমার মুক্তা কে দেখার ইচ্ছে জাগলো। মুক্তার কাছে মুক্তার ছবি চাওয়াতেই আমাকে বিশাল এক বানী শুনেয়ি দিল। মুক্তা কে দেখার জন্য তখন আমার ততটা ইন্টারেষ্ট ছিল না, তাই আমার ও দ্বিতীয়বার ছবি দেখার সখ জাগে নি।
..
..
এভাবে আমাদের কথা চলতে থাকে প্রতিদিন। যে মেয়েটা পড়ালেখা নিয়ে সারাদিন ব্যস্ত থাকতো সে মেয়েটা এখন ফেবুতে একটা মেসেজ পাওয়ার অপেক্ষায় মোবাইল হাতে নিয়ে বসে থাকে। মুক্তা তখন তেজগাঁও কলেজের দ্বাদশ শ্রেনীর ছাএী।
..
..
আমি ফেবুতে এসে আমার নামের পাশে সবুজ বাতিটি উঠার আগেই মুক্তার মেসেজ আসে -আজকে ফেবুতে আসতে এত দেড়ি করেছেন কেন??
যার উওর আমি ইচ্ছে করেই না দিয়ে অন্য টপিকে চলে যেতাম। তখন লক্ষ করলাম আজকে আমার অনেক গুলো নোটিফিকেশন এসেছে। নোটিফিকেশনে ঢুকতেই আমি চমকিয়ে গেলাম। কেননা সবগুলো নোটিফিকেশনই মুক্তার। মুক্তা খুব যত্ন সহাকারে সে আমার প্রোফাইল পিকে আমার করা কমেন্ট গুলো পড়ছে এবং এতে লাইক দিচ্ছে। তখন বুঝতে পারলাম মুক্তা আজকে কলেজ থেকে এসেই আমার প্রোফাইল ভিজিট করেছে এবং আমান দেওয়া পোষ্ট গুলো পড়ে প্রত্যেকটা তে একটা একটা কমেন্ট করে রেখেছে। এতই কমেন্ট এসেছে যে আমি কমেন্ট রিপ্লাই দিব সেটা সম্ভব ছিল না। কমেন্ট নিয়ে মুক্তা কে কিছু বলব ঠিক এমন সময় মুক্তাই আমাকে বলে উঠল- আপনি অনেক সুন্দর করে কথা বলতে পারেন। আপনার পোষ্ট গুলো পরে আমার অনেক ভালো লেগেছে।
তখন আমি বুঝতে পারলাম আমাকে নিয়ে মুক্তার মাথায় ভূত ঢুকেছে।
..
...
হসপিটাল থেকে বাসায় আসার সময় ফেবুতে ঢুকে দেখি মুক্তা প্রায় ৪/৫ টা পিক দিয়ে রেখেছে কিন্তু মুক্তা তখন অনলাইনে ছিল না তাই আর জানতে পারলাম না পিক গুলো কার।
..
রাতে মুক্তা কে আমি কিছু বলার আগেই মুক্তা বলএ উঠল- আমি কিন্তু ফেবুতে কিংবা অপরিচিত কাউকে ছবি দেই না।
আমিঃ তাহলে আমাকে দিয়েছেন কেন??
মুক্তাঃ আপনাকে আমার অনেক ভালো লাগে তাই।
..
..
তখন বুঝতে পারি নি মুক্তা আমাকে "আপনাকে আমার অনেক ভালো লাগে" এই কথা বলে প্রপোজ করেছে। আমাকে মুক্তার ভালো লাগে/ভালোবেসে ফেলেছে সেটা বুঝানোর জন্য অনেক কিছুই কিন্তু আমি সেই মানব যে কিনা মুক্তার ভাব ভঙ্গি বুঝতে পেরে ও না বুঝার ভান করে কথা চালিয়ে যেতাম।
..
রাত প্রায় ১২:২০ মিনিট। মুক্তার ছবি গুলো দেখে ইচ্ছে করেই বললাম- এটা তো পিচ্চি মেয়ের ছবি, দেখে মনে হচ্ছে ক্লাস নাইন/টেনে পড়ে। অপর প্রান্ত থেকে মেসেজ সিন করছে কিন্তু কোনো রিপ্লাই আসতেছে না। আমি তখন ভাবলাম আমার এই কথা শুনে মুক্তা রাগ করেছে। আমি মুক্তাকে সরি বলে মেসেজ সেন্ড করব এমন সময় অপরিচিত এক নাম্বার থেকে মিসড কল আসলো। সাথে সাথেই আবার ফোন আসলো। ফোন রিসিভ করতেই অপর প্রান্ত থেকে ফিস ফিস শব্দে খুব আস্তে কথা আসছে কিন্তু আমি তা স্পষ্ট বুঝতে পারছি না। একটু পরেই স্বাভাবিক ভাবে সালাম দিয়ে বলল- আমি মুক্তা। তখন আমি রীতিমতো শকড। কেননা ও আমার মেসেজ রিপ্লাই না দিয়ে ডিরেক্ট কল দিয়ে বসছে।
..
..
মুক্তা কে পিচ্চি বলাতে আমি ভেবেছিলাম মুক্তা রাগ করেছে। পরে জানতে পারলাম রাগের পরবর্তীতে সে আমার উপর Impressed. যদিও সেটা আমার কাছে প্রথমে শেয়ার করে নি কিন্তু ঠিকই আলামত দেখিয়েছেন। সেটা হলো তার মুখে অট্টহাসি। হাসি শুনে বুঝাই যাচ্ছিল যে সে আজকে মহা খুশি। যখন আমার কাছে Impressed হওয়ার ব্যাপারটা শেয়ার করেছে ততদিনে আমাদের রিলেশনের ৩ মাস চলতেছে। Impressed হওয়ার কারন জানতে চাইতেই মুক্তা আমাকে বলল- মানুষ প্রেম করার জন্য/Impress করার জন্য বাড়িয়ে সুন্দর বলে, কিউট বলে, রুপবতী বলে আর সেখানে তুমি অন্যদের মতো আমাকে পাম না দিয়ে, তুমি বলেছো আমাকে দেখতে পিচ্চিদের মতো লাগে। যা অন্য সবার থেকে ডিফারেন্স।
..
..
এইভাবে চলতে চলতে আমি কখন যে মুক্তার উপর নির্ভরশীল হয়ে গেছি নিজেও বলতে ও পারব না।
..
..
কিন্তু ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস। আমি যখনই মুক্তার উপর নির্ভরশীল হয়ে পরেছি, তখনই ভালোবাসার পরিবর্তে পেলাম অবহেলা।
..
..
যাকে অাপন ভেবে কাছে টেনে নেই সেই আমাকে অবহেলা করে দূরে সরিয়ে দেয়। যা আমার পক্ষে মেনে নিতে কষ্ট হয়।
রবিবার, ১২ নভেম্বর, ২০১৭
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
Post Top Ad
Author Details
গল্প পড়তে বা শুনতে কে না ভালোবাসে,সেই ছোট্ট বেলায় দাদির কোলে,নানির কোলে, বা অন্য কারো কোলে ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে বা চোখ কান খাড়া করে, বৃষ্টি বা শীতের রাতে খাতা মুরি দিয়ে অথবা চাঁদনি রাতে উঠোনে বা ছাদে পাটি বিছিয়ে গল্প কিচ্ছা শুনেনি এমন কোন মানুষ পাওয়া যাবে না।

কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
HELLO! VISITOR