বিধাতা জন্মের কিছু দিন পরেই মাকে কেড়ে নিয়েছো।কেন, কি অপরাধ ছিল আমার? আমি তো কোন দোষ করিনি! তাহলে কেন, এই আমাকেই কেন? জীবনে কত কষ্ট করে বড় হয়েছি কেউ না দেখলেও ,কেউ না জানলেও তুমি তো সব জানো।মায়ের ভালবাসা খুব বেশী দিন কপালে সহেনি।তখন তো ভাল মন্দ কিছু বুঝতাম না,আর বুঝলেও কম,আমার নিজের দেখা শুনা আমি নিজেই করতে পারি না।তাহলে কে দেখবে আমায়? আমার তো ঐ বয়সে মায়ের কোলে মাথা রেখে কত গল্প শুনার কথা ছিল।আমার তো মায়ের আদর স্নেহ তে বড় হওয়ার কথা ছিল।একটা মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্মনিয়ে জীবনটা শেষ হয়ে গেল।বাবা তো আরও একটা মা নিয়ে এসেছিল,তুমি তাকেও কেড়ে নিলে।কেন আমার কপালে কি সুখ লেখনি?তবুও আমার কোন অভীমান নেই তুমি তাদের জান্নাতবাসী করো।সবাই ছোট বেলায় বলতো এখন কষ্ট করে বড় হও।বড় হলেই কপালে সুখ পাবে।বিধাতা এই কি আমার সুখ!শুনেছি কষ্ট করলে কেষ্ট মেলে,কোথায়, আর কত দিন? তবে কি আমি সুখের দেখা পাব না? জীবনে ভালবাসা কি জানি না! সবাই বলে সৃষ্টকর্তা সবার জন্যই সঙ্গী সৃষ্টি করেছেন।তাহলে আমিও তো মানুষ,আমার জন্য কে,আর কোথায় সে?ভাবতাম আমার জীবনে হয়তো এমন একজন আসবে,সে আমাকে অনেক ভালবাসবে,শুধু আমাকেই ভালবাসবে,নিঃস্বার্থভাবে ভালবাসবে।সেই উঠতি বয়সে যখন ভালবাসা কি বুঝতামি না! রং নাম্বারের ছলনাময়ী জীবনটা নিঃশেষ করে দিয়েছে।যাকে কোন দিন চোখের দেখা দেখিওনি,তাকেই বিশ্বাস করেছিলাম।কিন্তুু সে আমার বিশ্বাসের অমর্যাদা করে আমাকে ধোঁকা দিয়েছে।তবে ভালই হয়েছে আমার মত একটা অপদার্থ জীবনের প্রথম ধাপটাকে রংনাম্বারে শেষ করে দিয়েছে।জীবনে চলতে হলে দু একবার হোঁচট খেতে হয়, তা না হলে হাটতে পারবো না তো।নিজের পায়ে দাড়াতে হলে পথে বাঁধা তো আসবেই।সব ভুলের মাসুল দিতে দিতে আসলো সেই অপরিচিতা ।কেমন বোকা আমি না জানলাম নাম,না পরিচয় ভালবেসে ফেললাম একটা অপরিচিত মেয়েকে।শুধু ভাল লাগাতেই ভালবেসে ফেললাম।সে যে হিন্দুধর্মালম্বী তা তো জানতাম না।তবুও আমি একটা মুসলমান ঘরে সন্তান হয়ে হিন্দুধর্মালম্বী মেয়েকে ভালবাসলাম। এটা কি আমার অন্যায়, নাকি ভুল? তাহলে ভালবাসা কি অপরাধ? পৃথীবিতে যারা প্রেম করেছে বা অন্য ধর্মাবলম্বীকে ভালবেসেছে তারা সবাই আমার মত অন্যায় করেছে,ভুল করেছে।আমিও সেই অন্যায়ে অপরাধী, সেই ভুলের আমিও দোষী।যাকে কোন কিছু না ভেবে এত ভালবাসলাম,তাকে না বলা কথাটা একবারের জন্যেও বলতে পারলাম না! কি অপদার্থ আমি। শুধু শুধু দুইটা বছর তার পেছনে নষ্ট করলাম।দুইটা বছরে শুধু একটা কথাই বলতে পারলাম না,এমন অপদার্থ আমি।কলেজ লাইফটা শুধু তাকে ভেবেই নষ্ট করে দিলাম।অথচ নিজের চোখেই তো দেখলাম কলেজ লাইফে কত জন কত কিছু কললো।আমি কিছুই করতে পারলাম না।ভাবছিলাম একা থাকাই ভাল,কোন চিন্তা নাই শুধু নিজেকে নিয়ে ভাবা ছাড়া।কিন্তুু লোকে বলে প্রেম এমন একটা রোগ যা একবার ধরলে আর ছাড়ে না।যে রোগের না আছে কোন চিকিৎসা, না আছে ডাক্তার,না কোন ঔষধ।শুধু আছে রোগী।হাজারো রোগী আছে এই রোগের।কে চিকিৎসা করবে? যে চিকিৎসা করতে যাবে সেও এই রোগে আক্রান্ত হবেই হবে।তাই সব কিছু ভেবে চিন্তা করে দেখলাম নিজেকে নিয়ে ভাবি যা হওয়ার হয়ে গেছে।কথায় আছে না,পাষ্ট ইজ পাষ্ট।কিন্তুু হঠাৎ চার পাশের মানুষের দিকে দেখলে আর ভাল লাগে না।সবাই দু চারটা করে গার্লফ্রেন্ডস বা বয়ফ্রেন্ডস নিয়ে ঘুরা ফেরা করে। এসব দেখলে বুকের বাম পাসে কেমন যেন করে,মনে হয় আমারও যদি এমন একজন থাকতো! যে সব সময় আমার খবর নিবে,শুধু আমাকেই ভালবাসবে,অন্য কাউকে না।আমাকে ঘিরেই হবে যার পৃথীবি।এসব কথা ভাবতে ভাবকে বুকের ভেতরে কোন কোন সময় আগুন ধরে যেত।তীলে তীলে পুড়ে পুড়ে সব শেষ হয়ে যেত।ভাবতাম হয়তো এই আগুন নেভানোর জন্য কোন মেঘ বালিকা আসবেই।সে তার মেঘ দিয়ে বুকের ভেতরটা শীতল করে দিবে।তার পর ভালবেসে আবারও নতুন করে বাঁচতে শেখাবে।নতুন করে স্বপ্ন দেেখাবে।কিন্তুু না মেঘ বালিকার পরিবর্তে আসলো নিঝুম বালিকা।আমিতো তাকে ভালবাসতাম,কিন্তুু প্রকাশ করিনি,কারণ আমি যে এরকমি।আমি আমার মত,অন্য কারও মত না।কেননা তাকে হারানোর ভয় ছিল।আমি তো তার যোগ্য না।সে একটু বেশী বুঝতো,কি সব উল্টা পাল্টা বলতো।সে আমাকে বার বার বলতো "তোমাকে ভালবাসি" ।আমি এড়িয়ে যেতাম,কারণ ঐ যে হারানোর ভয়।তবুও তাকে ফেরাতে পারিনি,পাগলিটা আমায় অনেক ভালবাসতো,অনেক কেয়ার করতো।সে আমাকে যেমন বলতো আমি তেমনি করতাম।তাকে নিয়ে কবিত লিখতাম।তার বিষয়ে সব কিছুই জানতাম।সে সব বলেছিল আমায়।এটাও বলেছিলো তার বিয়ে হয়তো অন্য কারও সাথে হবে।তবুও ভালবাসতাম।তার কষ্টটা আমি বুঝেছি।কিন্তুু সে তো আমায় বুঝলো না,সে হয়তো ভাবতো আমি তাকে ফলো করি না,কিন্তুু সব সময় করতাম।তার ফেছবুক, টাইমলাইন, লাইক,কমেন্ট সব।হঠাৎ তার পরিবর্তন লক্ষ্য করলাম।আমি তো এমনটা চাইনি,আমি চাইতাম সব সময় তুমি আমাকেই ভালবাসো,অন্য কাউকে না,তুমি আমাকে সময় দাও অন্য কাউকে না।বার বার বলেছি আমি যেমন ঠিক তেমনি হও।তোমার বাসা অনেক দূরে তাতে কি,বিশ্বাস করো আমি তোমাকেই ভালবাসি।কিন্তুু তুমি কেন আমায় বুঝোনা? তুমি না বুঝলে কে আমায় বুঝবে বলো?যত দিন আছো তুমি আমি তোমাকেই ভালবাসি। নিঝুম বালিকা কত স্বপ্ন দেখি, কত রাত নির্ঘুম কাটে তোমাতে ভেবে।তুমি কি কিছুই বুঝোনা? তুমিতো আমার বিষয়ে সব কিছুই যান।নিঝুম বালিকা তুমিই তো আমার শেষ ঠিকানা।যদি তুমি আমায় সঙ্গ না দাও,তা হলে আমার নিঃসঙ্গ জীবনে কে আমাকে সঙ্গ দিবে......?
রবিবার, ১২ নভেম্বর, ২০১৭
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
Post Top Ad
Author Details
গল্প পড়তে বা শুনতে কে না ভালোবাসে,সেই ছোট্ট বেলায় দাদির কোলে,নানির কোলে, বা অন্য কারো কোলে ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে বা চোখ কান খাড়া করে, বৃষ্টি বা শীতের রাতে খাতা মুরি দিয়ে অথবা চাঁদনি রাতে উঠোনে বা ছাদে পাটি বিছিয়ে গল্প কিচ্ছা শুনেনি এমন কোন মানুষ পাওয়া যাবে না।

কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
HELLO! VISITOR